বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন

ভর্তূকির চাল দান করে সমালোচনায় করবাহাদুর যুবলীগের আহবায়ক

নড়াইল প্রতিনিধি::

নড়াইল জেলা যুবলীগের আহবায়ক ওয়াহিদুজ্জামান নিজের ডিলারশীপের ও এম এস এর সরকারী চাল বিনামূল্যে বিতরণ করে দানবীর সাজছেন। এ ঘটনায় নড়াইল শহরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ফেসবুকে আওয়ামী-যুবলীগ নেতা-কর্মীরা এ ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য করছেন। তাদের বক্তব্য, যুবলীগ নেতা সরকারী কর্মসূচী নস্যাৎ করে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই কাজ করছেন, প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার এবং সেরা করদাতা, তিনি সরকারী চাল দিয়ে দাতাগিরি না ফলিয়ে সাধারণ মানুষকে সহায়তা করলে ভালো হত।

গতকাল রোববার ২’শ পরিবারের মধ্যে সরকারী চাল এর সাথে তিনি বিনামূল্যে আরো কিছু সামগ্রী ও বিতরণ করেন। এটা আবার গর্বের সাথে ফেসবুকেও প্রচার করা হয়েছে।

জানা গেছে, ৫ এপ্রিল থেকে সারাদেশে ওমমএস ডিলারদের মাধ্যমে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রী শুরু হয়েছে। নড়াইল পৌরসভার মাছিমদিয়া সুলতান বাজার এলাকার ওমমএস ডিলার জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ওহিদুজ্জামান সরকারিভাবে বিক্রীর জন্য ৯৮০ কেজি চাল উত্তোলন করেন। সরকারি নির্দেশনা রয়েছে একজন ক্রেতাকে ৫ কেজির বেশি চাল দেয়া যাবেনা আর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নিয়ম নিতীর তোয়াক্কা না করে সরকারি ভর্তূকির চাল উত্তোলন করে দান করছেন। এ নিয়ে সচেতন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

মিলন খান নামের আওয়ামীলীগ নেতা ফেসবুকে নাম উল্লেখ না করেই লিখেছেন, ঐ চালগুলি তো তারা দশটাকা কেজিতেই পাইতো। যেটা দেশরত্ন শেখ হাসিনার উদ্যোগে তাদের জন্য বরাদ্ধ। নিজের ছবিটি জুড়ার আগে একবার কি বঙ্গবন্ধু কন্যার দেওয়া এই বিশেষ অবদানের কথা বলেছেন ? আপনি অসহায়ের পাশে দাঁড়াবেন ভাল কথা, ঐ চালে ভাগ বসিয়ে বাহাদূরী না দেখাতেও পারতেন। আমরা জানি, আপনি এমনিতেই বাহাদূর। মাহাফুজুর রহমান নামে যুবলীগের এক নেতা নাম উল্লেখ না করেই লিখেছেন, ডি সি মহাদয় এবং এস পি মহাদয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করছি নড়াইলের কোন এক ও এম এস ডিলার গরিবের দশ টাকার চাল গরীবকে না দিয়ে ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রয় করলেন ? এবং গরীবের হক কেন সেই ব্যবসায়ী কিনলেন এবং দানের নামে দুর্নীতি করলেন দুজনের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যেহেতু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দাম্ভিকতার সাথে প্রচার করা হয়েছে। মেশকাত লিটু নামে একজন লিখেছেন, ওরে বাটপার !! গরীবের হক দশ টাকার চাল কিনে তুই দানবীর সাজিছিস। তিনি আরও লিখেছেন, এক ব্যাক্তির নিকট অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৯৮০ কেজি ও এম এসের চাল বিক্রয়কারী ডিলারের লাইসেন্স বাতিল ও আইনি প্রয়োগ দেখতে চায় নড়াইলবাসী।

জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী হাফিজুর রহমান বলেন, ওএমএস এর চাল কিনে মানুষের মাঝে বিতরণ করা হলে এটি অনিয়মের আশ্রায় নেয়া হয়েছে। এরকম সহযোগিতা লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই হতে পারেনা।

জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, যেহেতু শুধু চালে সাধারণ মানুষের প্রয়োজন মিটছে না তাই আমি বেশী দরিদ্র ২’শ মানুষকে এর সাথে ডাল, আলু আর সাবান দিয়েছি। এছাড়া অন্যদের কাছ থেকে টাকা নেইনি।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, উনি ডিলার উনি যদি চাল দিয়ে টাকা না নেন তাহলে আমাদের কি বলার আছে, আমি দেখেছি মাষ্টার রোল ঠিক আছে। এটা কোন সমস্যা নয়। জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, ও এম এস ডিলার যদি সে মানুষের কাছ থেকে টাকা না নিয়ে থাকে সে ব্যাপারে কিছু বলার নাই। তবে সরকারী ভতূর্কির চাল দান করার ব্যাপারে যে কথাটা এসেছে সেটা আমরা নিরুৎসাহিত করবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com